রমজানে রোজাদারের আমল
ডেস্ক রিপোর্ট, প্রতিক্ষণ ডটকম:
পবিত্র এ রমজান মাসে অল্প ইবাদতে বেশি সওয়াব পাওয়ার সর্বোত্তম সুযোগ। কারণ রমজান মাস মুমিনের জন্য ইবাদতের মৌসুম। রাসুল (সা.)-এর ভাষ্যমতে রমজানের একটি ফরজ ইবাদত অন্য সময়ের সত্তরটি ফরজের সমান। আর রমজানের একটি নফল আমল অন্য সময়ের একটি ফরজের সমান। তাই মহান আল্লাহও চান মুমিন বান্দা রমজান মাসে বেশি পরিমাণ নেক আমল করুক! রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, রমজান মাস আরম্ভ হলে আল্লাহর পক্ষ থেকে একজন ঘোষক অনবরত ঘোষণা করতে থাকে, হে সৎকর্মপরায়ণ! তুমি দ্রুত অগ্রসর হও। আর হে পাপাচারী! তুমি নিবৃত্ত হও।(তিরমিজি)। রমজানে রোজাদারের আমল সম্পর্কে প্রণীত হলো :
রোজা : মাহে রমজানের প্রধান আমল হলো রোজা। ইসলামের পাঁচটি মৌলিক বিধানের অন্যতম রোজাকে রমজান মাসের সঙ্গে শর্তায়িত করে ফরজ করা হয়েছে। রোজা বিশুদ্ধ হওয়ার জন্য নিয়ত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সুবহে সাদিকের পর থেকে নিয়ে সূর্য পশ্চিম দিকে হেলে যাওয়ার আগ পর্যন্ত রমজান মাসের ফরজ রোজার নিয়ত করা যায়। নিয়তের ক্ষেত্রে ভাষাটা কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। অন্তরের ইচ্ছাটাই আসল কথা।
তারাবির নামাজ : তারাবির নামাজ রমজান মাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ আমল। মাহে রমজানে এশার নামাজের পর দুই দুই রাকাত করে ২০ রাকাত তারাবির নামাজ আদায় করা রাসুলুল্লাহ (সা.) ও সাহাবায়ে কেরাম (রা.)-এর আমল, যা বিশুদ্ধ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। তারাবির নামাজের সওয়াব অনেক বেশি। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে রমজান মাসে পরিপূর্ণ ইমান নিয়ে সওয়াব লাভের আশায় কিয়াম করল- অর্থাৎ তারাবির নামাজ পড়ল, তার পূর্ববর্তী সব সগিরা গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।
রোজাদারকে ইফতার করানো : রোজাদারকে ইফতার করানো সীমাহীন সওয়াব এনে দেয় মুমিনের আমলনামায়। কারণ একজন রোজাদার সারা দিন খাদ্য, পানীয় ও যৌন সম্ভোগ বর্জনের মাধ্যমে নিজ জীবনে সাময়িকভাবে মহান আল্লাহর বৈশিষ্ট্যের অনুশীলন করে। তাই আল্লাহ রাব্বুল আলামিন রোজাদারকে অত্যন্ত ভালোবাসেন। আর যে ব্যক্তি রোজাদারকে সম্মান করে তাকে ইফতার করাবে, আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাকেও ভালোবাসবেন- এটাই স্বাভাবিক। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে কেউ কোনো রোজাদারকে একটা খেজুর, এক ঢোক দুধ অথবা একটু পানি দিয়ে ইফতার কারাবে, এটা তার গুনাহের ক্ষমা এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তির অধিকার
হিসেবে গণ্য হবে। আর যে কেউ কোনো রোজাদারকে পরিতৃপ্ত করে আহার করাবে, আল্লাহ তাকে হাউসে কাওসার থেকে এমন শরবত পান করাবেন যে জান্নাতে প্রবেশের আগ পর্যন্ত তার কোনো পিপাসা লাগবে না।’ (বায়হাকি)
কোরআন তেলাওয়াত : পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত মাহে রমজানের একটা বিশেষ আমল। জীবনবিধান হিসেবে কোরআনের আবেদন প্রত্যেক মুসলমানের জীবনে সর্বাধিক। বছরব্যাপী মুসলিম জীবনে কোরআন চর্চা হবে- এটাই স্বতঃসিদ্ধ কথা। এর পরও মুসলিমের জীবনে রমজান মাস আসে বিশেষ আবেদন নিয়ে। যেহেতু মাহে রমজানে কোরআন নাজিল হয়েছিল, তাই সময়ের স্মারক হিসেবে রমজানে বেশি করে কোরআন তেলাওয়াত করা সময়েরই দাবি।